ঢাকা সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ছে লিচুর মুকুল, ঝরছে গুটি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪

অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ছে লিচুর মুকুল, ঝরছে গুটি

দিনাজপুরে টানা অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ছে লিচুর মুকুল। গত ২ সপ্তাহের মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহে ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি। এতে করে ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লিচুচাষিরা।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দিনাজপুরে লিচু চাষে জমির পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৪৮৯ হেক্টর। জেলায় লিচু বাগানের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি।

চলতি বছরে দিনাজপুরে মৌসুমের শুরুতে চমৎকার ও উপযোগী আবহাওয়া থাকায় লিচু বাগানগুলোতে এবার ব্যাপক মুকুলের সমারোহ ঘটে। চৈত্র মাসের শেষদিকে গাছগুলোতে গুটি আসতে শুরু করে। কিন্তু বৈশাখের শুরু থেকে অব্যাহত দাবদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে গাছের মুকুল, ঝরে পড়ছে নতুন গুটি, শুকিয়ে যাচ্ছে গুটির বোটা। এতে করে প্রথম অবস্থায় গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ দেখে বেশ আশান্বিত হলেও এখন লিচুর ফলন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়া বিবেচনায় কোনো অবস্থাতেই দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশি থাকা অবস্থায় গাছে পানি দেওয়া বা স্প্রে করা যাবে না। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে গেলে গাছে স্প্র করে পানি ছিটাতে হবে, কীটনাশক দিতে হবে। সেই সঙ্গে গাছে কিছু অনুখাদ্য দিলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।

জেলার চিরিরবন্দর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা লিচু রক্ষায় বাগানে সেচ ও গাছের পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ লিচু রক্ষার জন্য গাছে কীটনাশক, বিভিন্ন অনুখাদ্য প্রয়োগ করছেন।

চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর গ্রামের লিচুচাষি লিমন বলেন, শুরুতে আবহাওয়া ভালো ছিল। কিন্তু বর্তমানে যে আবহাওয়া তাতে লিচুর অবস্থা গতবারের চেয়েও বেশি খারাপ হতে পারে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, লিচুগাছে এবার প্রচুর মুকুল আসার পরও বৈরী আবহাওয়ার কারণে গুটি ঝরে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ফলন অর্ধেকে নেমে যেতে পারে। তবে পরিস্তিতি মোকাবেলায় আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। তারা যদি পরামর্শ মেনে সঠিকভাবে সেচ দেয়, ওষুধ প্রয়োগ করে তাহলে এই লিচুকে আমরা হারভেস্ট পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারব এবং পর্যাপ্ত ফলন পাব।

তিনি আরো বলেন, যারা বিভিন্ন লিচু বাগান ইজারা নিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সেচ, পানি স্প্রেসহ অন্যান্য পরিচর্যার কোন ঘাটতি নেই, তারা পরিচর্যা করছেন।  লিচুর বাড়ন্ত পর্যায়ে এরকম প্রচন্ড ক্ষরা থেকে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হলে লিচু ফেটে যাবে। এমতাবস্থায় ফুট পাম্প এর সাহায্যে লিচুতে পানি স্প্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। খরার পর হঠাৎ বৃষ্টি হলে লিচু ফাটবে না। আর সেচ অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন থেকে দিনাজপুরে মৃদু ও মাঝারি দাবদাহ বিরাজ করছে। খুব শিগগিরিই এ থেকে উত্তরণের কোনো সম্ভাবনা নেই।

বার্তাজগৎ/এনামুল মবিন

Link copied!