ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

মাগুরা-ফরিদপুর রেল চালু হচ্ছে আগামী বছর

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৪

মাগুরা-ফরিদপুর রেল চালু হচ্ছে আগামী বছর

মাগুরা থেকে ফরিদপুর মধুখালী স্বপ্নের রেলপথ চালু হতে যাচ্ছে শিগগিরই। মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর ২২ মাসে প্রকল্পের ৪৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী বছরের প্রথম দিকেই এই রুটে রেল চলাচল শুরু হবে বলে আশা করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা জমি এখনো বুঝে না পাওয়ায় কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ ও করোনার প্রাদুর্ভাবসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মে মাসে। ওই বছরের ২৭ মে ভার্চুয়ালি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরেজমিনে গত বুধবার মধুমতী নদীতে নির্মাণাধীন রেল সেতুর মাগুরা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। মধুখালী অংশে পুরনো রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছে। ওই অংশে বেশ কিছু বক্স কার্ল্ভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে মাগুরা অংশে দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়নি।

জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক আসাদুল হক বলেন, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। এখন দ্রুত গতিতে কাজ এগুচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও খরচ বাড়েনি। মধুমতী নদীতে রেল সেতুসহ পুরো প্রকল্পের ৪৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের মধ্যে এখানে রেল চলা চল শুরু হবে।’

এখনো মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা বেশির ভাগ জমি বুঝে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। এটাকেই এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এই কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা অংশে রেল প্রকল্পে অধিগ্রহণ করা জমির পরিমাণ ১০৭ একরের মতো। যার মূল্য প্রায় ১১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অধিগ্রহণ করা এসব জমির বিপরীতে ক্ষতি গ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত দু দফায় ১ দশমিক ৯৬ একর জমির ক্ষতি পূরণ হিসেবে প্রায় দেড় কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।

মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু করেছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা চাইলে এখন স্টেশনের কাজ শুরু করতে পারবে। ঈদের আগে আরও কিছু জমি তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এর পর ধাপে ধাপে রেল লাইনের জমির শিগগিরই বুঝিয়ে দেওয়া হবে’।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ, কামারখালী ও মাগুরা স্টেশনইয়ার্ডে ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণ, দুটি নতুন স্টেশন (কামারখালী ও মাগুরা) নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ৪৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯দশমিক ৯কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করছে কাজী নাবিল আহমেদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেলকন স্ট্রাশন কোম্পানি লিমিটেড। অপর দিকে মধুমতী নদীর ওপর ২ হাজার ৪১২মিটার দৈর্ঘ্যের রেল সেতু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে ৪৪৯ কোটি টাকায়। এ কাজের ঠিকাদারি পেয়েছে মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বাকি অর্থ ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কাজে।

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!