ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

ভুল চিকিৎসা বলতে কিছু নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৪

ভুল চিকিৎসা বলতে কিছু নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভুল চিকিৎসা বলতে কিছু নেই, ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার আমাদের কারও নাই। আমরা কথায় কথায় দেখি ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে চিকিৎসকদের ওপর আক্রমণ হয়।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্দেশ্যে আমি বলি, ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার একমাত্র আছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি)। কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যদি সেখানে কমপ্লেইন করা হয়, তারা যাচাই-বাছাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা এবং অবহেলাজনিত কারণে বিএমডিসি তাদেরকে শাস্তির আওতায় এনেছে। সুতরাং হুট করে আমরা ভুল চিকিৎসা বলে দেবো, সেটি কিন্তু হয় না।

চিকিৎসকদের সুরক্ষা আমি দেখবো, কিন্তু রোগীদের সুরক্ষা আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের সুরক্ষার বিষয় দেখবো। আপনাদের সঙ্গে কোনো অবিচার হলে আমি দেখবো। আমি আপনাদের সাথে থাকবো। কিন্তু আপনাদের রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে আমি ব্যবস্থা নেব।

এ সময় ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, অফিস টাইমে কোনও চিকিৎসক যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিসের উদ্দেশ্যে হাসপাতালের বাইরে যান, তবে সে যেই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভুটানের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি একবার ভুটানে গিয়েছিলাম। সেখানে ভুটানের মানুষ আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেশ প্রশংসা করেছে। শুধু ভুটানের না, নেপালেও দেখে আসছি আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় তারা খুশি৷ আমি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কথা বলেছি। তারা আমাদের দেশে চিকিৎসা নিতে আসছে।

তিনি বলেন, বাহিরের দেশ যখন আমাদের চিকিৎসার ওপর আস্থা রাখেন তখন আমাদের গর্ব হয়। তাই আপনারা আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানকে এমনভাবে এগিয়ে নিয়ে যান যেন বিশ্বে আমাদের নিয়ে আলোচনা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা তাদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন, সেটি তারা করতেই পারেন, এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আমি উপলব্ধি করেছি এবং দেখেছি, কিছু চিকিৎসক ১২টার আগেই তাদের প্রাইভেট চেম্বারে চলে যান। কিছুদিন আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন চিকিৎসক অফিস চলাকালীন প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে অপারেশন করেছেন, এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই রোগীটি মারা যান। আমার কাছে যখন খবরটি এসেছে, আমি তখন লজ্জায় মাথা উঠাতে পারছিলাম না। এই বিষয়গুলো আমাদের কঠোরভাবেই দেখতে হবে।

এ সময় তিনি মন্ত্রী হওয়ার কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমি নাটক দেখতে ভালোবাসি। একদিন আমি আর আমার স্ত্রী নাটক দেখছিলাম। হটাৎ আমার কাছে একটি ফোন আসলো। এরপর কোথায় গেল আমার স্ত্রী, কোথায় গেল আমার নাটক। তার হিসেব নাই। আমি সারাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। ঘুরে ঘুরে হাসপাতাল পরিদর্শন করছি।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!