ঈদুল আজহার বাকি মাত্র দুই দিন। এরই মধ্যে ঢাকা চেড়েছেন অনেকেই। ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানীর রাস্তা। গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ কিছুটা কম। তবে যেসব যাত্রী টার্মিনালে আসছেন, তারা বাসের টিকিটসংকটের কথা বলছেন। পাশাপাশি বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন।
শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। এখানে বিভিন্ন কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশেরই টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। যেসব বাসের টিকিট রয়েছে, সেগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
মোহাম্মদপুর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন আয়মান ও আদিব। ঈদ উদযাপন করতে যাবেন খুলনার পাইকগাছায়। কিন্তু এসে দেখেন খুলনার কোনো বাসেই সিট খালি নেই। ফলে তাদের যশোরগামী বাসের টিকিট খুঁজতে হয়। সেই টিকিট নিতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। ঈদ কেন্দ্র করে টিকিটের দাম দেড়শ থেকে ২০০ টাকা বেশি চাইছে কাউন্টারগুলো।
এসময় আয়মান ও আদিব নামে দুই যাত্রীর কাছে টিকিট বিক্রি করতে আসেন ‘দ্রুতি পরিবহনে’র একজন কর্মচারী। তাদের কাছে যশোরের মনিহার পর্যন্ত ভাড়া প্রথমে ১৪০০ টাকা, পরে ১২০০ টাকা চান ওই ব্যক্তি। তবে নাজমুল বলেন, ভাড়া তো ৫০০ টাকা করে ১ হাজার টাকা। পরে টিকিট হাতে থাকা ওই ব্যক্তি বলেন, ৫০০ টাকা ভাড়ায় এখন যাওয়া সম্ভব না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্টার মাস্টার বলেন, তারা কোনো বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন না। যেহেতু তাদের কাছে টিকিট নেই, তাই অনেক কষ্টে তার ব্যবস্থা করে দিলে যাত্রীরা খুশি হয়ে বকশিশ দিচ্ছেন।
কামাল উদ্দিন নামের এক যাত্রী বলেন, অন্য সময় ২০০ টাকা করে ভাড়া নিত সেলফি। কিন্তু এখন তারা ১০০ টাকা বেশি নিচ্ছে। ভাড়া বেশি নেওয়ায় সেলফি পরিবহনের বদলে পদ্মা পরিবহনে কিছুটা কম খরচে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন লিটন।
সেলফি পরিবহনের একটি বাসের চালকের সহকারী রাসেল বলেন, আসার সময় খালি আসতে হয়। তাই একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দুপুরে গাবতলী কাউন্টারে আসেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত যে ভাড়া, তার চাইতে বেশি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুরো সময় টার্মিনালে রয়েছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিকাংশ বাসের আজকের দিনের টিকিট শেষ। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় কেউ নতুন বাস নামিয়েছেন। অনলাইনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। চাঁদরাত পর্যন্ত টিকিট বুকিং শেষ। যাত্রী চাইলেও পছন্দের বাসে ভ্রমণ করতে পারছেন না।
সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নয়ন জানান। তিনি বলেন, চাঁদরাত পর্যন্ত কোনো টিকিট নাই। কেউ টিকিট বাতিল করলে সেগুলো বিক্রি হবে। এ ছাড়া যাত্রীরা কাউন্টারে এসে টিকিট পাবেন না। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫টা বাস ছেড়ে গেছে, আরও ৫টা বাস ছাড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :