ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

পরীক্ষার দিন ডিম খেলে ফেল করে, কী বলে ইসলাম?

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৪

পরীক্ষার দিন ডিম খেলে ফেল করে, কী বলে ইসলাম?

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এ জীবন বিধান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। এতে কোনোরূপ যোগ-বিয়োগ করার সুযোগ নেই। এমনকি ইসলামে কুসংস্কারেরও কোনো স্থান নেই।

সমাজে বহুল প্রচলিত কুসংস্কারের মধ্যে একটি হলো পরীক্ষার দিন ডিম দিয়ে ভাত খেলে পরীক্ষায় ফেল করে। কিছু পরিবারে পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীকে ডিম খেতে দেওয়া হয় না। পরীক্ষায় ডিম বা গোল্লা পাওয়ার ভয়ে অনেকে এ কাজটি করেন।

এখন প্রশ্ন হলো, এ রকম ভিত্তিহীন কুসংস্কারের বিষয়ে ইসলাম কী বলে? ডিমের মতো একটি হালাল ও পুষ্টিকর খাবারকে পরীক্ষার দিন খাওয়া অশুভ মনে করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করার সুযোগ নেই।

হাদিস শরিফে আছে, হযরত আফফান (রহ.) থেকে বর্ণিত, সালিম ইবনে হাইয়ান আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, (আল্লাহর হুকুম ছাড়া) রোগের কোনো সংক্রমণ নেই, কুলক্ষণ বলে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের লক্ষণ নয়, সফর মাসের কোনো অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাক। (বুখারি ৫৭০৭)

মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ মহান আল্লাহর হাতে। কোনো বস্তু বিশেষ মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে না। তাই কোনো মুসলমান কোনো বস্তুকে অকল্যাণকর বলে বিশ্বাস করতে পারে না। অশুভ মনে করতে পারে না। হাদিসে কোনো কিছু অশুভ মনে করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

হযরত আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, কোনো কিছুকে অশুভ মনে করাও ঠিক নয়। (আবু দাউদ ৩৯১৬)

পরীক্ষার দিন সকালে ডিম খাওয়াকে অশুভ বলে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। এটা কুসংস্কার। ইসলামে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই। যারা কুসংস্কার বিশ্বাস করবে, তারা মূলত নবীজি (সা.)-এর নির্দেশনা অমান্য করবে। 

অযৌক্তিকতা থেকে উদ্ভূত কর্মকাণ্ডকে কুসংস্কার বলে বোঝায়। যার কোনো অস্তিত্ব ইসলামে নেই। আল্লাহ ইসলামকে পরিপূর্ণ ধর্মরূপে প্রেরণ করেছেন। তাতে অপূর্ণতা নেই। আর ইসলামে কোনো কুসংস্কারেরও স্থান পাওয়া যায় না।  

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের ওপর আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে’ (সুরা মায়েদা : ৩) ইসলাম পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠিত জীবনব্যবস্থা।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবায়ে কেরাম করেননি, এমন কোনো আমলের গ্রহণযোগ্যতা ইসলামে নেই। সুতরাং, প্রত্যেকের আমল অবশ্যই কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পরবর্তী যুগে কিছু জ্ঞানশূন্য মানুষের মাধ্যমে ইসলামে এমন কিছু আমল চালু হয়েছে, যা ইসলাম অনুমোদন করে না। এসব থেকে সবার বিরত থাকা কাম্য।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ইসলামে অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়। (বুখারি শরিফ)

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!